রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন

গাইবান্ধায় ব্যস্ততম মার্কেটগুলোর বেশির ভাগই অগ্নিঝুঁকিতে

গাইবান্ধায় ব্যস্ততম মার্কেটগুলোর বেশির ভাগই অগ্নিঝুঁকিতে

স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার জেলা শহর গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ি, সুন্দরগঞ্জ এবং সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাটসহ বিভিন্ন মার্কেটের বেশির ভাগই রয়েছে অগ্নিঝুঁকিতে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নেই কোন অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা। কোথাও কোথাও দেখা গেছে মেয়াদ উত্তির্ণ ফায়ার এক্সটিং গুইসার (সিলিন্ডার)। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের অগ্নিকান্ড দুর্ঘটনা। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারে ছোট বড় ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলা শহরসহ বিভিন্ন শহরে পরিকল্পনা ছাড়াই গড়ে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য মার্কেট। গাইবান্ধা জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব মার্কেটেই মুল রাস্তা থেকে ভিতরের গলি বেঁয়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ফুট ভিতরে যেতে হয়। গলির দুই পাশে প্রায় ২০ থেকে ২৪টি দোকান ঘর থাকে আর এই দোকান গুলোতে কাপড়, প্লাস্টিক জুতা, কাগজের প্যাকেট, রেক্সিনব্যাগ, বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্স, টায়ার টিউবসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ জাতীয় উপকরণ যা দ্রুতই অগ্নি ছড়াতে সক্ষম। গরমকালে দোকানে ক্রেতাদের আগমনে ভিতরের বাতাস প্রচন্ড গরম হয়ে ওঠে এবং অক্সিজেনের মাত্রাও কমে, প্রয়োজনীয় ভ্যান্টিলেশনের ব্যবস্থাও নেই যায় যা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। অন্যদিকে মার্কেট গুলের উপরের অংশে রাস্তার পাশের্^ ৩য় এবং ৪র্থ তলার দোকান ঘর ঘেঁষে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিদ্যুতের তার। তাছাড়া জরাপাল্টা বিদ্যুৎ টেলিফোন এবং বিভিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের তারের ছাড়াছড়িতে কোনটি বিদ্যুতের তার আর কোনটি ইন্টাননেট সংযোগ বোঝা দায়। ফলে আসন্ন গরমকাল এবং ঝড়বৃষ্টির দিনে মার্কেট গুলো রয়েছে সর্বোচ্চ ঝুঁকির মধ্যে। কোনো সময় সামান্য অগ্নিকান্ডের কারনে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
চলতি মাসে বিভিন্ন উপজেলার মার্কেট গুলো পরিদর্শন করেছে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ। পরিদর্শন রিপোর্টে জানা যায় বেশির ভাগ মার্কেট গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও যথেষ্ট দুর্বল। গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারি পরিচালক মোঃ এনামুল হক জানান, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মার্কেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং ক্লিনিক পরিদর্শন করে দেখা গেছে অনেক প্রতিষ্ঠানেই অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাপনা যথাযথ নেই। পরিদর্শন শেষে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় করনীয় নির্দেশনাসহ প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে । তবে সেই নির্দেশনা কেউ মানছে কেউ মানছে না। পরবর্তীতে যারা মানছে না তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গাইবান্ধার পৌর মেয়র মোঃ মতলুবর রহমান জানান, আমরা খুব শিঘ্রই প্রতিটি মার্কেটের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে ডেকে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিব। নির্দেশনা কেউ না মানলে পরবর্তীতে তাদের রিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৮০টির বেশি ছোট বড় মার্কেট রয়েছে। এইসব মার্কেটের মধ্যে অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৫৫টি মার্কেট, যার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫টি, গোবিন্দগঞ্জে ১৮টি, পলাশবাড়ীতে ৮টি, সাঘাটায় ৫টি, সাদুল্লাপুরে ৪টি, ফুলছড়িতে ৩টি এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২টি মার্কেট। এইসব মার্কেটের ভিতরে ফায়ার এক্সটিং গুইসার (সিলিন্ডার), পানির রিজার্ভ ট্যাংক, বালুভর্তি বালতি ও বিকল্প সিঁড়ি না থাকাসহ অগ্নিনির্বাপণের কোন ব্যবস্থাই খুজে পাওয়া যায়নি। ক্রেতা ও বিক্রেতার জান এবং মালের নিরাপত্তার খাতিরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমুহের আশু হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের দাবী সাধারণ ক্রেতাদের।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com